প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি | প্রোটিনের অভাবে কি রোগ হয় ?
প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি
আমাদের মানব দেহকে সুস্থ ও সরল রাখার জন্য প্রোটিন অত্যন্ত জরুরী। প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে আমাদের দেহ সুস্থ থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আমরা দৈনন্দিন জীবনে খাবারের সাথে অনেক কিছু খেয়ে থাকি। কিন্তু জানিনা কোনটা কোনটা প্রোটিন জাতীয় খাবার। তাই আমাদের সকলের জানা উচিত প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার না খেলে কি হয়।
আমরা বর্তমান সময়ে দেখতে গেলে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকি খাবার সময়টুকু ঠিকমতো পাই না। যার কারণে আমাদের দেহে দৈনিক যে খাবারে চাহিদা টুকু রয়েছে সেই খাবারের চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ হয় না। আবার অনেকেই দেহ মোটা ও ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করি না। আমাদের দেহের যে খাদ্য চাহিদা তার মধ্যে “প্রোটিন”একটি অন্যতম অংশ। আমাদের দেহের প্রোটিনের অভাব পূরণের ক্ষেত্রে সকলের প্রতিদিন পরিমাণ মতো প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।
প্রোটিন কাকে বলে
প্রোটিন হল এক ধরনের বৃহৎ জৈব অনু। যা কিনা এক বা একাধিক অ্যামিনো এসিড নিয়ে গঠিত হয়। যেমন: মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ছানা, দই ইত্যাদি খাবারে অ্যামিনো এসিড পাওয়া যায় এজন্য এই সকল খাবার কে প্রোটিন জাতীয় খাবার বলা হয়।
প্রোটিন জাতীয় খাবারের তালিকা
চিকিৎসকের গবেষণায় প্রোটিন যুক্ত খাবার অনেক রয়েছে তার মধ্যে কিছু কিছু খাবার তার থেকে গুণমানে ভালো তা নিচে আলোচনা করা হলো।
আরও পড়ুনঃ মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি | মধু খাওয়ার নিয়ম
মাংস
প্রোটিন যুক্ত খাবারের মধ্যেও মাংস একটি অন্যতম খাবার। মাংস তে রয়েছে ভরপুর প্রোটিন। যেমন: গরুর মাংস, মহিষের মাংস, খাসির মাংস, হাঁসের মাংস ও মুরগির মাংস। এই সকল মাংসে বেশি পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে যা আমাদের দেহের প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে একটা জিনিস লক্ষ্য করবেন সেটা হলো খাবারে যেন অতিরিক্ত মাত্রায় তেল ব্যবহার করা না হয়। অতিরিক্ত তেল খেলে আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়।
মাছ
প্রোটিন যুক্ত খাবারের মধ্যেও মাছ রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। যেটা থেকে আমরা অধিক পরিমাণে প্রোটিন পেয়ে থাকি। অনেক জাতীয় মাছ হয়ে থাকে। মাছের মধ্য ১০০ গ্রাম চিংড়ি মাছে রয়েছে ২৫ গ্রাম প্রোটিন যার মধ্যে থেকে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সহ আরো নানা উপাদান পাওয়া যায়। এছাড়াও অন্যান্য মাসের ক্ষেত্রে কম বেশি একই পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায় যা আমাদের অত্যন্ত জরুরি। যার ফলে আমাদের দেহ সুস্থ ও সবল থাকতে সাহায্য করে।
দুধ
দুধ আমরা ছোটবেলা থেকেই খেয়ে বড় হয়েছি। দুধ সবাই কমবেশি খেতে পছন্দ করে। এক গ্লাস দুধে রয়েছে ১০ গ্রাম প্রোটিন।
ডিম
ডিম খাওয়ার উপকারিতা অনেক। আর ডিম হচ্ছে এটি সহজলভ্য দ্রব্য। যা সহজেই কম দামে বাজার থেকে কিনা যায়। আর এই ডিমে রয়েছে অধিক পরিমাণে প্রোটিন। আবার ডিম খাওয়ারও কিছু ব্যতিক্রম নিয়ম রয়েছে।
কলিজা
আমরা উপরে দেখেছি যে মাংসে অনেক প্রোটিন থাকে। কিন্তু তার পাশাপাশি (গরুর কলিজা, খাসির কলিজা, ও মুরগি কলিজা) তে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম কলিজাতে ২০ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
দই
দই একটি মিষ্টি জাতীয় খাবার। যেটা কিনা আমরা বাসা বাড়িতে খেয়ে থাকি বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দই-মিষ্টি খেয়ে থাকি। কিন্তু মিষ্টি দই থেকে টক দই একটু বেশি উপকার। কারণ টক দই আমাদের খাবারের ভজন করতে সাহায্য করে। প্রতি 100 গ্রাম টক দই ২০ থেকে ২৫ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন পাওয়া যায়।
এছাড়া আরও রয়েছে
- আলু
- ডাল
- বাদাম
- পিয়ারা
- মিষ্টি কুমড়ার
- শিমের বিচি
- খাঁটি সুয়াবিন তেল
- যব
এই সকল খাবার পরিমাণ মতো আপনারা নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনাদের দেহের প্রোটিন চাহিদা পূরণ হবে। এবং দেহ সুস্থ থাকবে।
প্রোটিনের অভাবে কি রোগ হয়
প্রোটিন যুক্ত খাবার না খেলে আমাদের দেহে অনেক ধরনের রোগ হয়। যা আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে অনেক সমস্যা হয়। প্রোটিন জাতীয় খাবার না খেলে কি কি সমস্যা হয় তা নিম্নে দেওয়া দেয়া হলো।
১ হাতের নখ সাদা হয়ে যায়।
২ শরীর দুর্বল হয়ে যায়।
৩ চোখ ও হাত পা ফুলে যায়।
৪ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
৫ ধীরে ধীরে মাথার চুল পড়ে যায়।
৬ দেহে বৃদ্ধি গঠন থেমে যায়।
৭ অধিক পরিমাণে ক্ষুধা বেড়ে যায়।
৮ এছাড়াও আরো অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে।
প্রোটিন পাউডার কি
আমাদের মধ্যেও অনেক মানুষ রয়েছে যারা শারীরিকভাবে অক্ষম। হয়তো কেউ লম্বাই ছোট বা দেখতে অসুন্দর। তারা চাইলে প্রোটিন পাউডার কিনে এনে বাসায় খেতে পারেন। প্রোটিন পাউডার হচ্ছে সাধারণত সব প্রোটিন উপাদান কে একত্রে করে মেশিনের মাধ্যমে পাউডার করা হয় এবং সেটা বাজার জাত করা হয়।
আরও পড়ুনঃ ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার কি কি
সর্বশেষ কথাঃ
প্রোটিন আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেটার দেহে ঘাটতে পড়লে বিভিন্ন রকম সমস্যা ও রোগ বালাই দেখা দিতে পারে। পারে এবং এই সমস্যাটি বেড়ে গেলে আমরা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে পারি। মাথায় রেখে আমাদের প্রতিদিন খাবারের সাথে পরিমাণ মতো প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে তাহলে আমাদের দেহের প্রোটিনের অভাব পূরণ হবে। আশা করছি সম্পূর্ণ বিষয়টি আপনাদের ভালোভাবে বুঝাতে পেরেছি।