বেগম রোকেয়া জীবনের গল্প । বেগম রোকেয়া রচনা- Begum Rokeya life story
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এর জীবনী
বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার অর্ন্তগত পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতা নাম ছিলো জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের। তিনি ছিলেন সমাজসেবক, ন্যায়পরায়ণ ও অত্যন্ত উচ্চশিক্ষিত ছিলেন একজন শিক্ষিত জমিদার ছিলেন। তিনিঅনেক ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। কিন্তু নিজে শিক্ষিত এবং বাড়ির সব ছেলেদের শিক্ষিত করলে কি হবে। মেয়েদের ক্ষেত্রে তিনি প্রচুর কঠোর ছিলেন। তার মাতা নাম ছিলো রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী। বেগম রোকেয়া দুই বোন একজনের নাম করিমুননেসা ও আরেক জনের নাম হুমায়রা, আর তার তিন ভাই যাদের একজন শৈশবে মারা যায়। রোকেয়ার বড় ২ভাই মোহাম্মদ ইব্রাহীম আবুল আসাদ সাবের ও খলিলুর রহমান আবু যায়গাম সাবের ছিলেন বিদ্যানুরাগী। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে অধ্যয়ন করে তারা আধুনিক মনস্ক হয়ে ওঠেন।রোকেয়ার বড় বোন করিমুন্নেসাও ছিলেন বিদ্যোৎসাহী ও সাহিত্যানুরাগী। বেগম রোকেয়ার শিক্ষালাভ, সাহিত্যচর্চা এবং সামগ্রিক মূল্যবোধ গঠনে বড় ২ভাই ও বোন করিমুন্নেসার যথেষ্ট অবদান ছিল।
বেগম রোকেয়া ১৮৯৬ সালে বিয়ে হয়। মাত্র ১৬ বছর বয়সী বেগম রোকেয়া কে সাখাওয়াত হোসেন তিনি বিয়ে করেন। দেখতে অসুন্দর বা খুত থাকলে কি হবে, তাদের বিয়ে বেগম রোকেয়া জন্য বিশাল কর্ম যজ্ঞের দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়। স্বামী সাখাওয়াত হোসেন বেগম রোকেয়া লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে তাকে আরো শিক্ষিত করে তুলতে সাহায্য করতে শুরু করলেন সাখাওয়াত হোসেন। এই শিক্ষায় তাকে ভাবিয়ে তোলে সে সময়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজ কুসংস্কারাচ্ছন্ন জীবন শিক্ষাহীন নারীদের সমাজের ও জীবন মুক্তির কথা। নারীদের অশিক্ষার অন্ধকার থেকে কি করে তাদের টেনে তোলা যায় সেটা ভাবতে শুরু করলেন ।
বেগম রোকেয়ার সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত হয়েছিল তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন অনুপ্রেরণায়। ১৯০২ সালে পিপাসা নামক একটা বাংলা গদ্য রচনার মধ্য দিয়ে তার সাহিত্য জীবন শুরু হয়। পিপাসা বের করার পর ১৯০৫ সালে সুলতানাস ড্রিম নামক একটি ইংরেজি গ্রন্থ বের করেন তিনি। স্বামী সাখাওয়াত হোসেন লেখাটি পড়ে তার অনেক ভালো লাগে এবং তাকে উৎসাহ দেন লেখাটি বই আকারে প্রকাশ করার জন্য। স্বামীর অনুপ্রেরণা পেয়ে উৎসাহ হন এবং বই প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুনঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর জীবনের গল্প
তার স্বামী ১৯০৯ সালের ৩ মে সাখাওয়াত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। চৌদ্দ বছরের এই বিবাহিত জীবনকে ইতি টেনে স্বামী সাখাওয়াত হোসেন মারা যান। কিন্তু স্বামী মারা যাওয়া এই বিচ্ছেদ রোকেয়াকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। একই বছরে ১ অক্টোবর বেগম রোকেয়া ভাগলপুরে প্রতিষ্ঠিত করেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল। মাত্র ৫ জন ছাত্রী নিয়ে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল শুরু হয়। বোরখা পড়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছাত্রী সংগ্রহ করতে লাগল বেগম রোকেয়া। সেই অবস্থায় মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠা একরকম দুঃসাধ্য সাধন বললেই চলে। কিন্তু রোকেয়া হার মানে নি। এমনকি সমাজের মানুষের চক্ষুশূল হওয়ার পরও তিনি সমাজের নারীদের জন্য কাজ করে গেছেন।বেগম রোকেয়া নারী সমাজ এর খুব খারাপ অবস্থা সম্পর্কে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে তিনি অনেক গুলো বই রচনা করেছেন। তার রচিত বই গুলোর মধ্যে সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, মতিচুর, দুখন্ড, অবরোধবাসিনী, মুক্তিফল ইত্যাদি।
বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালের ৯ই ডিসেম্বর শুক্রবার রাত এগারটাই মৃত্যুবরণ করেন। তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ৫২ বছর। শোধপুরের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। বেগম রোকেয়া ছিলেন বাংলার নারী সমাজের একমাত্র আদর্শ।
সব সময়ের জন্য আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো করে রাখুন।
thanks❤️
thanks for info
Nice
Thanks,,,ato valo info diyar jonno 🌼